নারী উন্নয়নে দাতাদেশ ও সংস্থা সমূহের একটি পর্যালোচনা পার্ট-১

   তৃতীয় অধ্যায় 

নারী উন্নয়ন কৌশল পত্রঃ
             কৌশলপত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান বিশেষত আয় বর্ধক প্রশিক্ষণ, কৃষি, কম্পিউটার ইত্যাদি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীকে আত্মনির্ভলশীল ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার বিষয় সন্নিবেশিত রয়েছে। 

ক্ষুদ্র ও মাঝারী নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সহজ শর্তে স্বল্প হারে ঋণ প্রদান বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ আর্থিক সহায়তা প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

 বিশেষত টে´টাইল, হস্তশিল্প, বয়ন শিল্পের বিকাশে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ঐড়সব নধংবফ সরপৎড় পহঃবৎঢ়ৎরংব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

 শ্রম বাজারে নারীর প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি কর্মসংস্থার সৃষ্টি ও দক্ষতা বৃদ্ধি ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করার মধ্য দয়ে নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদরুপে গড়ে তোলার বিষয় কৌশলপত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। 
                    

এ কৌশলপত্রের সাথে সংগতিপূর্ণ  করে সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১) ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১০-২০১৫) প্রণয়ন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।   

এই কৌশল পত্রে আরও বলা হয়েছে
বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান অফিস আদালত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্তব্যরত মহিলারা তাদের মাতৃত্ব লাভের সময় বেতন সহ ছুটি লাভ করে থাকবে ।   

সরকার অসহায় এবং স্বামী পরিত্যক্ত দুস্থ মহিলাদের জন্য ভাতাপ্রদান করে থাকে । এই কর্মসূচির অধীনে ৪৬১ টি উপজেলায় ৪৪৭৯টি ইউনিয়নে ২লক্ষ্য অসহায় মহিলাদেরকে প্রতিমাসে ৩৫০ টাকা প্রদান করা হয় ।


               চতুর্থ অধ্যায়


নারীদের উন্নয়নে দাতা সংস্থার  ভূমিকা ঃ
            আমাদের দেশের মেয়েদের  সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দাতাদেশ কাজ করে যাচ্ছে । তারা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত কাজ করছে শুধুমাত্র নারীদের উন্নয়নের জন্য । এছাড়া আমাদের দেশী কিছু প্রতিষ্ঠান ও এনজিও আছে যারা মেয়েদের স্বাবলম্বী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে ।


তবে বিদেশী দাতাদেশ সমূহ যে পরিমানে আমাদের সাহায্য সহযোগীতা করে যাচ্ছে তা ঠিকভাবে কাজে লাগালো সম্ভব হচ্ছে না । অধিকাংশ ক্ষেত্রে দাতা দেশ সমূহ যে কারণে অর্থপ্রদান করছে তার সবটুকু ব্যয় করা হচ্ছে না । 

নারীদের উন্নয়নে দাতাদেশ সমূহের কার্যক্রম যদি ১ দশক ধরে সঠিক ভাবে প্ররিচালিত করা সম্ভব হয় তবে আমাদের দেশের নারী দের প্রতি অবহেলা আর থাকবে না । 


নারী উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা ঃ- 
                    নারী উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সাউথ সাউথ সম্মান দেওয়া হয়  । তিনি নিউইয়কে ইন্টারন্যাসনাল অর্গানাইজেসন ফর সাউথ সাউথ কোঅপারেশন  আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয় । বাংলাদেশের নারী উন্নয়নে সরকারের অনন্য অবদান
 রাখায় জাতিসংঘ থেকে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে । সরকারের ভূমিকার পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও ব্যাক্তিগত ভাবে অনেকেই নারী উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে ।

নারী উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকাঃ-  
                            নারী উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওর ভূমিকা ও উদ্দ্যেগ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ । দারিদ্র্যে বৈষম্য, নির্যাতন অবসানের লক্ষ্যে বিভিন্ন এনজিও এবং নারীবাদী সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে । বাংলাদেশের এনজিও দের শীর্ষ সংগঠন হলো এডাপ  । নি¤েœ তাদের কার্যক্রম তুলে ধরা হলো ঃ-

এক.  ঋণ ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্যদের আয় বৃদ্ধিমূলক কাজ । 
দুই. আইনগত শিক্ষা ও সহায়তা । নির্যাতিত দারিদ্রদের আশ্রয় ও পূর্ণবাসন ।
তিন. মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণে গতিশীলতা বাড়ানো । 
চার. জীবিকা নির্বাহের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ ।
পাঁচ. দারিদ্রদের স্বাস্থ্য খাদ্য, পুষ্টি এবং শিশু পরিচর্যার বিষয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা  ।
ছয়. নারী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি । 
সাত. জেন্ডার সমতায়ন ও টেকসই দারিদ্র্যে দূরিকরণ ।
আট. অর্থনৈতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রচার,জনমতগঠন,সমাবেশ আন্দোলন পরিচালনা করা । 
নয়. এনজিওর নেতৃত্বে তৃণমূল পর্যায়ে দারিদ্রেদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা ।
দশ. এনজিও গুলো দারিদ্র্যের টার্গেট গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত করে বিভিন্ন কর্মসূচি ও উদ্দ্যেগ গ্রহণ করে ।

হাইমচর ব্যুরোঃ-
           নারীবিমোচন ও বেকারত্ব দূরিকরণে হাইমচর ঋণ সেবার মাধ্যমে অসহায় পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুড়িয়ে দিতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে ।
               “নারীবিমোচন অঙ্গীকার,
              একটি বাড়ি একটি খামার” ।
 যার সূচনা ২০১০ সালে হয় । সরকার গরু,ছাগল দিয়ে সহায়তা করে থাকে এই প্রকল্পে ।  তবে সরকারের লোকবলের অভাবে এটি তেমন সাফলতা অর্জন করতে পারেনি । এই প্রকল্পের সমন্বয় করেন জিল্লুর রহমান । তাদের একটি প্রতিবেদনে জানা যায় তাদের কার্যক্রম ৬টি উপজেলায় ৫৯টি সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে  ।


অন্যান্য প্রতিষ্ঠানঃ- 
          গ্রামীন ব্যাংক, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, প্রশিকা, আশা,শক্তি ফাউন্ডেশন,ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, সমবায় অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ইত্যাদি সহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান  নারীমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে । 

ক্যালরী গ্রহণ ভিত্তিক নারীও চরম দারিদ্র্যের হারের পরিবর্তন (শতকরা)ঃ-
         নি¤েœ ক্যালরী গ্রহণ ভিত্তিক নারীও চরম দারিদ্র্যের হারের পরিবর্তন  একটি ছকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলোঃ-

দারিদ্র্যের প্রকৃতি
    ১৯৮৩-৮৪    ১৯৮৫-৮৬    ১৯৮৮-৮৯    ১৯৯১-৯২    ১৯৯৫-৯৬    ১৯৯৯-২০০০    ২০০৫-০৬
জাতীয়    ৬২.৬    ৫৫.৭    ৪৭.৮    ৪৩.৫    ৪৭.৫    ৪৪.৩    ৪০.৪
পল্লী    ৬১.৯    ৫৪.৭    ৪৭.৮    ৪৭.৬    ৪৭.১    ৪২.৩০    ৩৯.৫
শহর    ৬৭.৮    ৬২.৬    ৪৭.৬    ৪৬.৭    ৪৯.৭    ৫২.৫০    ৪৩.২
জাতীয়     ৩৬.৮৫    ২৬.৯    ২৮.৪    ২৮.০    ২৫.১    ২০.০    ১৯.৫
পল্লী    ৩৬.৭    ২৬.৩    ২৮.৬    ২৮.৩    ২৪.৬    ১৮.৮০    ১৭.৯
শহর    ৩৭.৪    ৩০.৭    ২৬.৪    ২৬.৩    ২৭.৩    ২৫.০০    ২৪.৫
         উৎসঃ- বিবি এস খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০০৫, অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৭ এবং২০১০ পৃ ১৪৮ ও ১৮৩ ।

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন